স্বদেশ ডেস্ক:
রাজধানীর মিরপুরে একটি হত্যাকাণ্ডের পর নিহতের টি-শার্টের লেখা দেখে তার পরিচয় নিশ্চিত করেছে পুলিশ। এরপর মাত্র দুদিনের তদন্ত শেষে আসামিদের সনাক্ত এবং তাদের গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। গত শুক্রবার এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। আজ রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরে পুলিশ।
জানা গেছে, রাজধানীর মিরপুরে একটি সিগারেট কোম্পানিতে বিক্রয় প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করতেন মো. জুয়েল রানা (২৯)। তার কাছে থাকতো কোম্পানির মোট অঙ্কের টাকা। জুয়েলের পূর্বপরিচিত মো. মিরাজের হঠাৎ টাকার প্রয়োজন হয়। তিনি জানতেন জুয়েলের কাছে নগদ টাকা আছে। সেই টাকা হাতিয়ে নিতেই মিরাজ দুই সহযোগীকে নিয়ে জুয়েলকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।
পরিকল্পনার অংশ হিসেবে গত শুক্রবার রাত ১০টার দিকে মিরাজ, রাসেল ও আরেকজন অপ্রাপ্তবয়স্ক মিলে তারা জুয়েলকে গাবতলীতে ডেকে আনেন এবং পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী মুখ চেপে ও রশি দিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করেন। পরে রাত সাড়ে ১২টার দিকে একটি ড্রামে ভরে তার মরদেহ মিরপুরের লাভ রোডের একটি রাস্তায় ফেলে দেন।
স্থানীয়রা মিরপুর মডেল থানায় ফোন দিলে পুলিশ এসে লাশের সুরতহাল করে। সেসময় নিহতের পরনে ‘সাফল্যের পথে একসাথে’ লেখা টি-শার্ট দেখতে পায় পুলিশ। পরে অনুসন্ধান করে পুলিশ জানতে পারে এই শ্লোগানটি একটি টোবাকো কোম্পানি ব্যবহার করে। ওই কোম্পানির লোকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ও নিহতের ছবি দেখিয়ে জানা যায়- নিহতের নাম মো. জুয়েল রানা (২৯)। তার বাড়ি ভোলা সদরে। পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে ছবি দেখালে তারাও পরিচয় নিশ্চিত করেন।
আজ রোববার বিকেলে ডিসি মিরপুর বিভাগের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে উপ-কমিশনার (ডিসি) আ স ম মাহতাব উদ্দিন জানান, এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী মোসা. সালমা আক্তার (২২) বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। ঘটনা তদন্তে আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ওই তিন আসামিকে সনাক্ত করে পুলিশ। এরপর রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
শুধু টাকার জন্যেই জুয়েল হত্যার শিকার, নাকি মাদক নিয়ে তাদের দ্বন্দ্ব ছিল- জানতে চাইলে তিনি বলেন, সিগারেট কোম্পানিতে বিক্রয় প্রতিনিধির কাজ করায় জুয়েলের কাছে বিক্রয় বাবদ মোটা অঙ্কের টাকা মজুদ থাকত, এটা জানতেন মিরাজ। তিনজন মিলে ওই টাকা হাতিয়ে নিতেই হত্যার পরিকল্পনা করেন।